About Us

Noyon chatterjee - 

আমিই অসাম্প্রদায়িকতার বাস্তব রূপ

 ১.

এখন যারা আমার লেখা পড়তে আসে, আমি বুঝি তারা বেশিরভাগই নতুন।

ফলে আমার লেখার ধরণ, মানে আন্তর্জাতিক রাজনৈতিক বিশ্লেষণে ডেমোক্র্যাট-রিপাবলিকান শব্দগুলো দেখে হয়ত না বুঝেই অনেকে অনেক মন্তব্য করেন।
২.
অনেকে আমার লেখায় আগের লেখার সাথে মিল পান না। আসলে আমি দীর্ঘ ৩ বছর ধরে লেখা থেকে দূরে। আপনি যদি ৩ বছর গাড়ি না চালান, তবে ৩ বছর পর গাড়ি চালাতে আসলে প্রথম প্রথম ব্যতিক্রম হতেই পারে। তবে লেখালেখিটা আরো জটিল। প্রতিনিয়ত ইনফরমেশন আপডেট হতে হয়। ফলে কেউ যদি ৩ বছর লেখালেখি থেকে দূরে থাকে, তবে তার লেখার হাত ফিরতে সময় ও পরিশ্রম দিতে হবে যথেষ্ট। দেখবেন, কোন খেলোয়ার ইনজুরী থেকে ফিরলে তাকে অনেক পরিশ্রম করে তারপর মাঠে ফিরতে হয়, আমার অবস্থা হয়েছে সেরকম।
৩.
আসলে আমি আন্তর্জাতিক রাজনৈতিক বিশ্লেষন নিয়ে ২০১৭ সালে কিছু ক্লাস করিয়েছিলাম। এরপর সে অনুসারে লেখালেখিও করতাম। আমাকে সবাই বলতো, আপনার ভবিষ্যতবাণী ফলে যায়। আসলে আমি ভবিষ্যত বানী করি না। বরং আন্তর্জাতিক বিশ্লেষণ হচ্ছে এক ধরনের অংক। আপনিও যদি সূত্র জানেন, তবে আপনিও হিসেব-নিকেষ করে বুঝতে পারবেন সামনে কি হতে যাচ্ছে এবং সেক্ষেত্রে আপনার কী করা উচিত।
৪.
রাজনৈতিক বিশ্লেষণ শেখা হচ্ছে, অনেকটা দাবা খেলার মত। আপনি যদি জানেন দাবার গুটি কোন চাল কেমন, তবে আপনি খেলার ধরনটা বুঝতে পারবেন। কিন্তু আপনি যদি গুটির চাল না জানেন, তবে আপনার কাছে সব কিছু এলোমেলো চাল মনে হবে। এবং ভবিষ্যত রাজনীতি নিয়ে আপনি বিন্দুমাত্র বুঝতে পারবেন না এবং আপনার নিজের পদক্ষেপগুলোও ভুল হবে।
৫.
অনেকে আমার শব্দগুলো শুনে বলে, “দূর এগুলো বলে কিছু নেই।” আরে ভাই আপনার নিজেরও তো কিছু নিয়ম কানুন, নীতিমালা আছে। ছোট একটা সংগঠন খুলেন, তাদেরও কিছু নীতি মালা নিয়ম কানুন আছে। তাহলে যারা বড় বড় সংগঠন চালায়, নেটওয়ার্ক চালায়, ব্লক চালায়, তাদের কোন নীতিমালা , নিয়ম কানুন নেই ? যদি তাদের নীতিমালা নাই থাকতো তবে তাদের এত শক্তিশালী ব্লক বা নেটওয়ার্ক তৈরী হতো না। তাদের সেই নীতিমালা বা ধরন বুঝতেই আন্তর্জাতিক রাজনৈতিক বিশ্লেষণ শেখা জরুরী।
৬.
অনেকে বলবেন- দূর এসব ডেমোক্র্যাট রিপাবলিকান কিছু না।
আরে ভাই, আপনি যা জানেন না, তার সবটাই কী মিথ্যা ? আপনার জ্ঞানের বাইরে কী কোন জ্ঞান নেই ? ঠাণ্ডা মাথায় আমার লেখাগুলো পড়ুন, দেখবেন আপনর সামনে জ্ঞানের অনেক দ্বার উন্মুক্ত হবে। উদাহরণ- একটা অক্ষরজ্ঞান মানুষ একটা বই দেখলে ভাবে, দূর এই বইয়ে কী কিছ আছে ? কিন্তু সেই বইটা যখন ক্লাস ওয়ানে পড়া অক্ষর চেনা একটা বাচ্চা দেখে, সে ভাবে- বইয়ে দেখি সব বর্ণমালা উল্টা পাল্টা করে লেখা। সিরিয়াল নেই। ক্লাস-৩ এর বাচ্চা ঐ বইকে রিডিং পড়তে পারে। ক্লাস ৫-৬ এর বাচ্চা কিছু কিছু বুঝে। ক্লাস ৯-১০ এর বাচ্চা আরো বেশি কিছু বুঝে। একজন রিসার্চের স্টুডেন্ট ঐ বই পড়ে গবেষণা করে। মানে জিনিস একই , কিন্তু আপনার ভিতরে কতটুকু জ্ঞান আছে সেটার উপর ভিত্তি করে আপনি সেখান থেকে ফায়দা নিতে পারবেন। আন্তর্জাতিক রাজনীতির ক্ষেত্রেও বিষয়টি এমন।
৭.
আমি যখন প্রথম রাজনৈতিক বিশ্লেষণ নিয়ে লেখা শুরু করি, তখন বলেছিলাম পলেটিকাল একটর কিভাবে তৈরী হয়।
ধরুন আপনি কোন এলাকায় কাজ করেন। কিন্তু আপনি এলাকায় কোন বড় ভাইয়ের সাথে সম্পর্ক রাখেন। সেই বড় ভাই আরেক বড় ভাইয়ের সাথে সম্পর্ক রাখে। এভাবে করে গ্রামের বড় ভাই ইউনিয়নের বড় ভাইয়ের সাথে, ইউনিয়নের বড় ভাই উপজেলার বড় ভাইয়ের সাথে, উপজেলার বড় ভাই জেলার বড় ভাইয়ের সাথে, জেলার বড় ভাই বিভাগের বড় ভাইয়ের সাথে, বিভাগের বড় ভাই জাতীয় পর্যায়ের কোন বড় ভাইয়ের সাথে, জাতীয় পর্যায়ের কোন বড় ভাই উপমহাদেশ পর্যায়ের কোন বড় ভাইয়ের সাথে, উপমহাদেশ পর্যায়ের কোন বড় ভাই আন্তর্জাতিক পর্যায়ের কোন বড় ভাই বা রাজনৈতিক নেটওয়ার্ক বা ব্লকে সংযুক্ত হচ্ছে। এভাবে করে নিচের একটা লোক উপরে গিয়ে ডেমোক্র্যাট, রিপাবলিকানসহ বিভিন্ন আন্তর্জাতিক নেটওয়ার্কে সংযুক্ত হয়ে যায়।
এই যে নেটওয়ার্ক বা ব্লক, উপরে গিয়ে যার সাথে মিশে নিচে সেই আচরণের প্রতিফলন বা আভাস দেখা যায়্। আপনি যখন উপরের নেটওয়ার্ক বা ব্লকগুলো সম্পর্কে ধারণা পাবেন, তখন ঐ দলের নিচের একজন কর্মীর আচরণ দেখে আপনি বলে দিবেন, সে কোন আন্তর্জাতিক দলের অংশ। হতেও পারে ঐ ব্যক্তি নিজে জানে, অথবা জানতে নাও পারে। কিন্তু তার কার্যক্রমই বলে দিবে সে কোন ব্লকের অংশ।
এভাবে করে সবাইকে যখন আপনি পলিটিকাল ক্লাসিফাই করতে থাকবেন, তখন খুব পলিটিকস আপনার কাছে বিচ্ছিন্ন কিছু বা “সব কিছু এমনি এমনি হয়” এমন মনে হবে না। মনে হবে সব কিছু সূত্র মাফিকই হচ্ছে। আমি পলিটিকাল এনলাইসিস শিক্ষায় আপনাদের সেই সূত্রগুলো শেখাতে চাই।
৮.
আসলে কেউ পলিটিকস করুক অথবা না করুক, তার পলিটিকাল অ্যাওয়ার থাকার জরুরী।
কারণ সে যদি পলিটিকাল অ্যাওয়ার না হয়, তবে আন্তর্জাতিক পলিটিকাল দলগুলো অত্যন্ত সু-চতুর। ঐ ব্যক্তির অনিচ্ছায় তার দ্বারা নিজেদের কাজ উদ্ধার করে ফেলবে, সে জানবেও না। তাই কোন দল/ব্লকের দ্বারা ব্যবহৃত হওয়া থেকে বাচতে হলেও তার সেই আন্তর্জাতিক পলিটিকাল বিশ্লেষণ বা অ্যানালাইসিস শেখা উচিত।
৯.
বাংলাদেশে যারা পলিটিকাল বিশ্লেষণ করে, তারা দেশীয় রাজনীতির মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকতে চায়, বাইরে যেতে চায় না। আমার মনে হয়, এটা ভুল। কারণ নিচে যাই হোক সব কিছুর উপর থেকে নিয়ন্ত্রণ হয়। তাই আপনি যদি উপরের অংশটা বুঝতে পারেন, উপর থেকে সব কিছু দেখেন তাহলে সবটুকু দেখতে পাবেন। কিন্তু নিচে কি হচ্ছে এটা দেখে কখনই পুরোটা বুঝতে পারবেন না।
১০.
বাংলাদেশে পলিটিকস নিয়ে আলোচনাকে আমি শেয়ার মার্কেটের সাথে মিলাই। শেয়ার মার্কেটের সংখ্যাগুরু মানুষ গুজব নির্ভর। গুজবের উপর ভিত্তি করে তারা শেয়ার কিনে। কিংবা গুরু বলেছে তাই কিনেছে। কিন্তু এর পেছনে সূত্রটা তার জানা নাই। কিন্তু শেয়ার মার্কেট বলেন আর ফরেক্স বলেন, যারা আসল সূত্রটা বুঝে ব্যবসাটা আসলে তারাই করে। বাকিরা সব কিছূ ষড়যন্ত্রতত্ত্ব ও গুজবের উপর মেরে দেয়। রাজনীতিও মঞ্চটাও অনেকটা সেইম। গুজব আর ষড়যন্ত্রতত্ত্বেরা ছড়াছড়ি। কেউ কষ্ট করে পড়ালেখা করে সূত্রগুলো শিখতে চায় না। আর উপরের লোকগুলোও শেখাতে চায় না। কারণ নিচের লোকগুলো শিখে গেলে তো আর তাদের নিয়ন্ত্রণ করা যাবে না। ফলে নিজেরা জানলেও নিচেরদের শেখাতে চায় না।

No comments

Powered by Blogger.